দুপুর ২:৪৭, বুধবার, ২২শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আফছারুল আমীন: নিতেন না পুলিশ প্রটোকল, গাড়িতে ছিল না স্টিকারও

আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:

১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল বাংলাদেশের চট্টগ্রাম উপকূলীয় অঞ্চলে আড়াইশ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানে এক প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্ণিঝড়। সেই ঘূর্ণিঝড়ে প্রাণ হারান অন্তত ১ লাখ ৩৮ হাজার মানুষ। ঘরবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হন ১ কোটিরও বেশি। সেসময় সদ্য ক্ষমতায় আসা বিএনপি সরকারের ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কে উদাসীনতা ও দায়িত্বহীনতা তুমুল সমালোচনার সৃষ্টি করে। চরম মানবিক বিপর্যয় সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় সরকারি সাহায্য-সহযোগীতা পাননি ক্ষতিগ্রস্তরা। কারো দিকে না তাকিয়ে দুর্গতদের সাহায্যে ঝাপিয়ে পড়েন চট্টগ্রামের এক তরুণ চিকিৎসক। জনসেবা তার রক্তে, তরুণ ওই চিকিৎসকের বাবাও ছিলেন চিকিৎসক। সরকারি-বেসরকারি নানা আশ্রয়কেন্দ্রে চিকিৎসাসেবা দিয়ে আলোচনায় আসেন তিনি। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে ডা. আফছারুল আমিনের নাম।

আফছারুল আমিনের জন্ম চট্টগ্রামের দক্ষিণ কাট্টলী এলাকায়, ১৯৫২ সালের ১ জানুয়ারি। ডা. ফজলুল আমিন ও হাজেরা খাতুন দম্পতির বড় ছেলে আফছারুল আমিন। টানা তিন মেয়াদে সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেও সাদামাটা জীবন যাপনে এতটুকু পরিবর্তন ঘটেনি তার। সরকারের নির্বাহী বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকেও আফছারুল আমিন সাথে রাখতেন না পুলিশ প্রটোকল ও গানম্যান। এমকি গাড়িতেও ছিলোনা বিশেষ কোনো স্টিকার। চট্টগ্রামে আসলে ব্যবহার করতেন না সরকারি গাড়িও। তার সাথে সাক্ষাতের জন্য প্রয়োজন হতো না কোনো মাধ্যম। নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় প্রতিদিন সরাসরি সাক্ষাৎ করতেন সংসদীয় আসনের সাধারণ মানুষের সাথে।

আফছারুল আমিন রাজনীতির নানা ধাপ পেরিয়ে ২০০৮ সালে চট্টগ্রাম-৯ আসনে বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল নোমানকে হারিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপরের দুই নির্বাচনেও বিজয়ী হন তিনি। অবশ্য ২০০৮ সালের আগের দুই সংসদ নির্বাচনেও নিজ আসন থেকে অংশগ্রহণ করেছিলেন।

২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে মহাজোট সরকার গঠন করলে শুরুতে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান তিনি। পরবর্তীতে প্রাথমিক ও গণ শিক্ষা মন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। সবশেষ শিক্ষা মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি পদে ছিলেন আফছারুল আমিন।

চট্টগ্রামের গণমানুষের প্রিয় এই রাজনীতিবীদ রাজনীতি করেছেন সাধারণ মানুষের কল্যাণে। প্রতিষ্ঠা করেছেন বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আমৃত্যু চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন তিনি।

দুই ছেলের জনক আফছারুল আমীন। বড় ছেলে ফয়সাল আমীন পারিবারিক ব্যবসা দেখাশোনা করেন। ছোট ছেলে মাহিদ বিন আমীনকে দীক্ষা দিয়েছেন নিজের পেশায়। বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার পদে কর্মরত মাহিদ বিন আমীন। আফছারুল আমিনের স্ত্রী অধ্যাপক কামরুন্নাহারও দেশের স্বনামধন্য চিকিৎসক। ২০১৮ সালে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল থেকে অবসর গ্রহণ করেন তিনি।

২০২০ সালে জানুয়ারিতে ফুসফুসে ক্যান্সার ধরা পড়ে তার। দীর্ঘদিন চিকিৎসার পর শুক্রবার রাতে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন গুণী এই রাজনীতিবিদ।

আজকের সারাদেশ/০৩জুন/এএইচ

সর্বশেষ সংবাদ

সৈকত ও প্রবাল এক্সপ্রেসের প্রথম দিনে আয় প্রায় ৫ লাখ

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহতরা পাবেন আজীবন চিকিৎসা ভাতা

বিএনপির ৩১ দফা কেবল দেশ ও দেশের মানুষের জন্য

কলকাতায় বাংলাদেশি পর্যটকে ভাটা, ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত

বোয়ালখালী পৌসভা নানা অনিয়মে গিলে খেয়েছে ‘সিন্ডিকেট’

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে এখনো দাপুটে আওয়ামী লীগের শাহ আমানত ও জান্নাত ট্রেডিং

আ.লীগের ইন্ধনে শহীদ তানভীরের ভাইকে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ

আইটিডি ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্সে চবির সাংবাদিকতা বিভাগের ১৭ গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন

চবিতে ‘ক্যারিয়ার ইনসাইটস ও লাইফ লেসন’ কর্মশালা অনুষ্ঠিত

চবির টাঙ্গাইল স্টুডেন্টস এসোসিয়েশনের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত