আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:
স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে স্কাউটদের নেতৃত্ব দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান।
বুধবার নগরীর পিটিআই মিলনায়তনে ‘চট্রগ্রাম জেলার সকল স্কুলে শতভাগ স্কাউটিং কার্যক্রম নিশ্চিতকরণ এবং স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে স্কাউটিং’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় এই মন্তব্য করেন তিনি। চট্রগ্রাম জেলাকে বাংলাদেশের প্রথম স্মার্ট জেলায় রুপান্তরে স্টেক হোল্ডার কনালটেশনের ধারাবাহিকতায় এ সভা আহবান করা হয়।
জেলা প্রশাসক বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানের প্রথম স্তম্ভ হলো স্মার্ট নাগরিক তৈরি। স্মার্ট সিটিজেন তৈরীতে স্কাউটাররা অগ্রনী ভূমিকা পালন করতে পারে। স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের জন্য প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন সচেতন ও আলোকিত নাগরিক গঠনে স্কাউটকে নেতৃত্ব দিতে হবে।’
এসময় স্মার্ট চট্রগ্রাম বিনির্মানে বিভিন্ন উদ্যোগ সভায় অংশগ্রহনকারীদের সামনে তুলে ধরেন জেলা প্রশাসক।
পলিথিনের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা ও পাটের ব্যাগে উদ্বুদ্ধকরণ, গ্রিন সিটি নিশ্চিতকরণে ২৩ সালে ২৩ লক্ষ বৃক্ষরোপণ, স্মার্ট টুরিজমে শহর থেকে পতেংগা সমুদ্র সৈকত পর্যন্ত স্মার্ট টুরিস্ট বাস চালুকরণ, স্মার্ট স্পোর্টস বাস্তবায়নে ১৯১ টি ইউনিয়নে ১৯১ টি খেলার মাঠ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ, স্মার্ট কৃষিতে কৃষিশ্রমিক ও সরঞ্জাম সরবরাহ প্লাটফর্ম প্রভৃতি উদ্যোগ ও উদ্ভাবন সবিস্তারে উপস্থাপন করেন।
এছাড়া চট্রগ্রাম মহানগরীর স্কুলগুলোর জন্য চট্রগ্রাম জেলা প্রশাসন চালু করতে যাচ্ছে স্মার্ট স্কুল বাস। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের অগ্রসরমান প্রযুক্তিসম্বলিত এসব বাসে থাকবে সব ধরণের আধুনিক সুযোগ সুবিধা যেমন ওয়াই ফাই, আইপি ক্যামেরা প্রভৃতি। শিক্ষার্থীদের স্কুলযাত্রা নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে এসব বাসে ওঠা, নামা এবং অবস্থান মনিটরিং এর পাশাপাশি স্কুলে পৌছার সাথে সাথে অভিভাবকদের কাছে চলে যাবে সয়ংক্রীয় মেসেজ। এর ফলে অভিভাবকগন নিশ্চিন্তে থাকবেন। এ স্মার্ট বাসের মাধ্যমে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের যুগান্তকারী উপকার হবে বলে উপস্থিত শিক্ষকমণ্ডলী উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। উপস্থিত শিক্ষকদেরকে এ ধরণের নতুন নতুন আইডিয়া নিয়ে শিক্ষাক্ষেত্র কে স্মার্ট শিক্ষা ব্যবস্থায় রুপান্তরে উদ্যমী হওয়ার আহবান করেন। তিনি প্রতিটি স্কুলে শিক্ষার্থীদের স্পোর্টস ক্লাব, বিজ্ঞান ক্লাব, রোবটিক্স ক্লাব, ল্যাংগুয়েজ ক্লাব, বিতর্ক ক্লাব স্থাপন করে অন্তত দুটি করে ক্লাবের সদস্য করার জন্য শিক্ষকদের নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্মার্ট লাইব্রেরি স্থাপন, স্মার্ট ক্লাসরুম তৈরি, স্মার্ট ক্লাস কনটেন্ট তৈরির উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি সকল বিদ্যালয়ে আগামী তিন মাসের মধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী দুটি করে স্কাউট দল গঠন করে শতভাগ স্কাউটিং নিশ্চিত করার আহবান জানান।
উপস্থিত শিক্ষকমণ্ডলী এবং অতিথিবৃন্দ জেলা প্রশাসকের এসব উদ্যোগের ভুয়সী প্রশংসা করেন।
এসময় সকল শিক্ষক শতভাগ স্কাউটিং বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরিতে তাদের দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন এবং স্কাউটিং কার্যক্রমকে সে অনুযায়ী একীভূত করে সকল স্কাউটারদের স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে আত্মনিয়োগ করার অংগীকার ব্যক্ত করেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আবদুল মালেক।
চট্টগ্রাম মহানগরের ১৪৮ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, স্কাউট শিক্ষক, শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তাবৃন্দ, জেলা স্কাউট কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন ইউনিটের স্কাউটস নেতারা সভায় উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া, শিক্ষা বিভাগের উপপরিচালক, জেলা শিক্ষা অফিসার, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন জেলা স্কাউটসের উপকমিশনারসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আজকের সারাদেশ/১৪জুন/এএইচ