আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:
অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস, পরিশ্রমহীনতা, সুশৃঙ্খল জীবন যাপন মেনে না চলার কারণে উচ্চ রক্তচাপে ভোগা রোগীর সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে চট্টগ্রামে। গত এক বছরে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের প্রায় ৩০ শতাংশ রোগী উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় আক্রান্ত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
চিকিৎসকদের মতে, সুশৃঙ্খল খাদ্যাভ্যাস, কায়িক পরিশ্রম, দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকা, নিয়মিত অষুধ সেবন ও জীবনাচরণ পরিবর্তনে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। এই বিষয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক ডা. আবুল ফয়সাল মোহাম্মদ নুরুদ্দিন বলেন, ‘প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে সম্প্রতি সময়ে উচ্চ রক্তচাপের রোগীর সংখ্যা আগের চেয়ে তুলনামূলক বেশি পাওয়া যাচ্ছে। গড় হিসেব করলে ভর্তি হওয়াদের মধ্যে কমপক্ষে ৩০ শতাংশ রোগীই পাওয়া যায়, যারা উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত। মূলত এসব রোগীর চলাফেরা, তার খাদ্যাভাস-সহ নানা কারণেই এ রোগে ভুগছেন। তাতে করে এসব রোগীরা অন্য রোগেও আক্রান্ত হচ্ছেন।’
বাংলাদেশ হাইপারটেনশন ও হার্ট ফেইলিউর ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. প্রবীর কুমার দাস বলেন, ‘অপরিমিত খাদ্যাভ্যাস, পরিবেশগত কারণ, ধূমপান-মদপান, ফাস্ট ফুডসহ নানা কারণে উচ্চ রক্তচাপের রোগী বাড়ছে। উচ্চ রক্তচাপ নিজেই হাইপারটেনশন সৃষ্টি করে। এর মাধ্যমে বিভিন্ন অঙ্গহানি ঘটায়। মানুষ ডায়াবেটিককে যেভাবে ভয় পায়, হাইপারটেনশনকে সেভাবে ভয় পায় না। অথচ বর্তমানে হাইপারটেনশন ডায়াবেটিকের চেয়েও কমন একটি রোগ। তাই শুধুমাত্র মেডিসিনের উপর ভরসা না করে মানুষের জীবনমানের পরিবর্তন আনতে হবে। তাহলে এ রোগ থেকে বাঁচা সম্ভব হবে।’
এদিকে, মঙ্গলবার (১৬ মে) গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) আয়োজিত ‘বাংলাদেশে উচ্চ রক্তচাপ পরিস্থিতি ও করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়, প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতি ৫ জনে ১ জন উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন। ভয়াবহ বিষয় হলো, আক্রান্তদের অর্ধেক নারী (৫১%) এবং দুই-তৃতীয়াংশ পুরুষই (৬৭%) জানেন না যে তাদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে। এমনকি এই রোগে আক্রান্ত অধিকাংশ রোগীই (৬৪%) কোনো ওষুধ সেবন করে না। এ অবস্থায় কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধের প্রাপ্যতা এবং এজন্য প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
আজকের সারাদেশ/১৭ মে/ এএইচ