তাসনীম হাসান
➡প্রায় একক বীরত্মে ইংল্যান্ডকে দুই দুটা বিশ্বকাপ এনে দেয়া।
➡একা হাতে অজি-বদের সেই রূপকথা!
এই তিন ইনিংসেই ক্রিকেট ইতিহাসে নিজের নাম সোনার হরফে খোদাই করে ফেলেছেন বেন স্টোকস। লর্ডস, হেডিংলি আর মেলবোর্নের তিন মঞ্চের কৃতিত্ব যার একার থলিতে তার অমরত্বের জন্য আর কি কিছু লাগে?
তবুও ক্রিকেটের যে বেনের কাছে আরও পাওনা ছিল তা কে জানত? তাও সেটা আধুনিক ক্রিকেটের ‘সবচেয়ে’ সৃজনশীল ক্যাপ্টেন্সির রসদ!
১৭ ম্যাচে মাত্র ১ জয়ে তখন প্রায় ডুবতে বসেছিল ইংলিশ টেস্ট গৌরব। আর ওমন কঠিন সময়ে দলের দায়িত্ব নিয়ে প্রথমে ম্যাককালামকে সঙ্গী করে আমদানি করলেন ওয়ানডের মতো আগ্রাসী মোড়কে লাল বলের ক্রিকেট! রোমাঞ্চিত ক্রিকেটবিশ্ব যার খেতাবি নাম দিল ব্যাজবল!
অ্যাসেজের প্রথম টেস্টে তো আরও নতুন কিছু দেখালেন বেন। বৃষ্টির ভবিষ্যৎ আগেভাগেই ধরতে পেরে প্রথম দিনেই ইনিংস ঘোষণা করে বসলেন! সেটি নিয়ে এমনিতেই বিস্ময়ের ঘোর চারিপাশে!
সেটির রেশ থামার আগেই তৃতীয় দিনে তো বেনের মস্তিষ্কজাত আরও একটা অভাবনীয় দৃশ্য দেখল ক্রিকেট-দুনিয়া। সেঞ্চুরি করে উইকেটে জমে যাওয়া উসমান খাঁজাকে ফেরাতে তার সামনের ৩০ গজের মধ্যেই ছয় ফিল্ডারকে নিয়ে এলেন বেন। সেই পাতা ফাঁদে পা দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে বোল্ড খাঁজা।
একজন ব্যাটারকে এমন অভিনব কৌশলে আউট করতে কোনো অধিনায়ক দেখিয়েছিলেন? ইমরান খান, স্টিভ ওয়াহ, সৌরভ গাঙ্গুলি কিংবা মহেন্দ্র সিং! মনে নেই!
দিনশেষে অনেক হাফ সান্স জিতে পেট কামিন্স আর নাথান বিরল জুটি গড়ায় বেনের সব কৌশল হয়তো কাজে দেয়নি।
কিন্তু স্বার্থহীন, আগে দলের ভাবনা, হার নিয়ে বেশি না ভাবা এবং সবসময় ইতিবাচক থাকার মূলনীতিকে লালন করা বেনে আপনার মুগ্ধ হতেই হবে!
আমার চোখে তাই এই জামানার সেরা অধিনায়ক আর কেউ নয়। নামটি শুধুই-‘বেঞ্জামিন অ্যান্ড্রু স্টোকস’!
কেন না ‘ব্যাডবয়’ থেকে একজন দায়িত্বপূর্ণ অধিনায়ক হয়ে ওঠার জন্য শুধু নিরলস পরিশ্রম নয়! ত্যাগ, শৃঙ্খলার অনেক নিরব অশ্রুও যে ঝরিয়েছেন বেন!
এবং তা একাকিই!
হারার দিনেও তাই তোমার জন্য হাততালি বরাদ্দ রইল বেন, জেতার দিনগুলোতে তো বটেই।
লেখক: সংবাদকর্মী
আজকের সারাদেশ/২১জুন/এসএম