আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:
আর কদিন পরই পবিত্র ঈদ-উল-আজহা। এখন তাই কামারপাড়ায় কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে দুটা শব্দ-টুং টাং। ব্যস্ততা তাদের এতটাই বেড়েছে-কাজ করতে হচ্ছে রাত-দিন।
গরু-ছাগল জবেহ ও মাংস কাটাকুটি করার নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী মেরামত কিংবা নতুন করে তৈরি করছেন অনেকেই। ফলে হাসি ফুটেছে কামারদের মুখে মুখে!
তারা রাতদিন বসে তৈরি করছেন হরেক-রকমের দা, ছুরিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী।
সরেজমিন নগরীর কাপাসগোলা, ফিরিঙ্গিবাজার, দেওয়ানহাটসহ বেশ কয়েকটি কামারের দোকানে গিয়ে দেখা যায় কেউ গলে যাওয়া লোহা হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হাতিয়ার তৈরির উপযোগী করছেন। কেউবা পশু জবাই করার ছুরি ধার করছেন।
একটি হাতিয়ার তৈরি করতে লোহা অনুযায়ী দাম নেওয়া হচ্ছে। ক্রেতাদের পছন্দের মতো তৈরি করছেন বিভিন্ন মাপের চাপাতি, দা, বটি, ছুরি, কুড়াল আর ছোট চাকুর মতো লোহার সব ধারালো অস্ত্র। এগুলো সবই ব্যবহার হবে কোরবানীর পশু জবাই থেকে শুরু করে মাংস ছাড়ানো আর হাড় কাটার কাজে।
কেউ কেউ আবার গতবারের পুরাতন ছুরি ধার করিয়ে নিচ্ছেন নতুন করে।
কাপাসগোলা এলাকার কামার অপু শীল জানান, ‘অন্যান্য বারের তুলনা এ বার নতুন দা-বটি তৈরির ফরমায়েশ বেড়েছে। আর পুরাতন গুলো মেরামত হচ্ছে পরিমানে বেশি। বিশেষ করে কোরবানীর ঈদ এলে এসব দা-বটিসহ অন্যান্য উপকরণের কদর বেড়ে যায়। চলতি মৌসুমে কয়লার অভাবে কাজ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এখন কয়লা পাওয়া দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে। কয়লা পাওয়া গেলেও দাম চড়া, তাই মেরামত দাম একটু বেশী।’
আরেক কামার জানান, কয়লা, লোহাসহ অন্যান্য উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ার ফলে নতুন দা-বটিসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দামও বেড়ে গেছে। বছরের মধ্যে ১১ মাসই কামার পরিবারদের বসে থাকতে হয়। শুধু কোরবানীর ঈদ এলেই তাদের ব্যস্ততা পুরোদমে বেড়ে যায়। এসময়ে কিছুটা আর্থিক সুবিধা পাওয়া যায়। এ ছাড়া অনেক কামার বাড়ি বাড়ি গিয়ে দা-বটি-ছড়ি মেরামত করে থাকে।
ছুরি মেরামত করতে আসা শিরীন আক্তার জানান, গরু জবাই করার জন্য বড় একটি ছুরি তৈরির অর্ডার দিয়েছি। তার দাম হলো একহাজার পাঁচশত টাকা। তবে অন্যান্য বারের তুলনায় এবার দাম অনেক বেশি।
ঈদের এই শেষ সপ্তাহে অতীতের সব লোকসান কাটিয়ে এবার ভালো ব্যবসা হবে এমনই আশা করছেন চট্টগ্রামের কামারশিল্পীরা।
আজকের সারাদেশ/২৫জুন/একে