আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:
দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলা কুড়িগ্রামের সবকটি নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। ফলে সেখানকার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। দুধকুমার নদের পানি বিপৎসীমার ৪২ সেন্টিমিটার উঠেছে। এছাড়া ধরলার পানি বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া অবিরাম বৃষ্টি এবং ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ফলে রংপুরের গঙ্গাচড়া ও কাউনিয়া উপজেলার চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
বার্তা সংস্থা ইউএনবির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দুধকুমার নদের পানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধির ফলে স্থানীয় সড়ক তলিয়ে গিয়ে কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। গত ৩-৪ দিন ধরে বন্যায় প্লাবিতরা মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। বাড়ির ভেতরে পানি ওঠায় তারা ঠিকমতো রান্নাও করতে পারছেন না। স্যানিটেশন ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে ভুগছে বন্যাকবলিত এসব পরিবার। জেলা প্রশাসন পক্ষ থেকে বন্যার্তদের তালিকা করা হচ্ছে। এছাড়া বন্যাকবলিত ৮ শতাধিক পরিবারে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, ইতোমধ্যে ৬৫ মেট্রিক টন চাল উপজেলাগুলোতে উপবরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও আমাদের কাছে ৫৮৫ মেট্রিকটন চাল, ১০ লাখ টাকা এবং ১ হাজার ৭০০ প্যাকেট শুকনো খাবার মজুদ রয়েছে। আমরা বন্যার্তদের তালিকা করছি, তালিকা পেলে উপবরাদ্দ দেওয়া হবে। শুক্রবার বিভিন্ন বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে জেলা প্রশাসন থেকে ৮০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, এই পানি বৃদ্ধির অবস্থা ৩ থেকে ৪ দিন পর্যন্ত থাকতে পারে। তারপর পানি নেমে যাবে। কুড়িগ্রাম পাউবোর কোনো বাঁধ বন্যায় ডুবে যায়নি। নাগেশ্বরী উপজেলায় একটি সড়ক সংস্কারের কাজ করেছে পাউবো। সেটির দুটি অংশ প্লাবিত হয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকেছে।
তিস্তার পানি বাড়ায় ভোগান্তিতে মানুষ:
অবিরাম বৃষ্টি আর ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। রংপুরের গঙ্গাচড়া ও কাউনিয়া উপজেলার চরাঞ্চলের নতুন নতুন এলাকাসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত ৫০ হাজার মানুষ।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড কন্ট্রোল রুমের তথ্যমতে, শনিবার (১৫ জুলাই) ভোর ৬টায় ডালিয়া ব্যারেজ পয়েন্টে বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার এবং সকাল ৯টায় ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে গঙ্গাচড়ায় সকাল ৯টায় বিপদসীমার ১৭ সেন্টিমিটার এবং কাউনিয়ায় বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের ৩০টি গ্রাম দুই থেকে তিন ফুট পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত ৩০ হাজার মানুষ।
আজকের সারাদেশ/১৫ জুলাই ২০২৩/জেএম