আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:
ময়মনসিংহ নগরীর সুপেয় পানির জটিলতা দূর করে বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের একটি টিম এক হয়েছেন।
ছাত্রলীগ-ছাত্রদলের যৌথ উদ্যোগ ময়মনসিংহ নগরীর ১১নং ওয়ার্ডে বিশুদ্ধ পানির সমাধান শেষে এদিন নগরীর কাচিঝুলি এলাকার একটি রেস্টুরেন্টের হল রুমে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের রাজনৈতিক ফেলো মহানগর ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ফাহিম ফেরদৌস ও মহানগর দক্ষিণ থানা ছাত্রদলের সদস্য সচিব গোবিন্দ রায় দূর করেন একটি সমস্যা। এরপর সংবাদ সম্মেলনে এক হন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নগরীর ঘনবসতিপূর্ণ নিম্ন আয়ের মানুষের আবাসস্থল ১১নং ওয়ার্ডের নওমহল এলাকা। এ ওয়ার্ডে বিশুদ্ধ পানির সংকট ছিল। যৌথভাবে এ দুই সংগঠনের নেতারা সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নিয়ে এলাকাবাসীর কাছ থেকে ১ হাজার লোকের গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করেন।
পরে সিটি মেয়র ইকরামুল হক টিটুকে এলাকার বিশুদ্ধ পানির দাবি জানানো হয়। মেয়র দাবিনামা হাতে পাওয়ার তিন দিনের মধ্যে পানির ট্যাংকসহ একটি সাবমার্সিবল পাম্প স্থাপন করে সুপেয় পানির সমস্যার সমাধান করেন।
এ দুই নেতা জানান, ‘পর্যায়ক্রমে নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডে বিশুদ্ধ পানির সমস্যা ছাড়াও এলাকার পরিচ্ছন্ন পরিবেশ, মাদক নিয়ে সচেতনতামূলক কাজ করে যাবেন তারা। এ কাজে যুক্ত হয়ে তাদের মানসিকতায় ব্যাপক ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের নেতারা একে অপরের প্রতিপক্ষ হিসেবে পরিচিত থাকলেও ময়মনসিংহ মহানগরের এই ছাত্রলীগ ও ছাত্রদল নেতা এখন পরস্পরের বন্ধু।’
ফাহিম ফেরদৌস ফুয়াদ বলেন, ‘আগে আমি রাজনীতি বলতে শুধু মিছিল করা আর নেতাদের প্রটোকল দেওয়াকেই বুঝতাম। মানুষের ছোটখাটো কিছু উপকার হয়তো করতাম। কিন্তু এত বৃহৎ পরিসরে মানুষের পাশে দাঁড়ানো যায়, এ ধারণা আগে ছিল না। এ ছাড়া ছাত্রদলের একজন নেতার সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতা একসঙ্গে কাজ করতে পারে, বন্ধু হতে পারে, এমন ধারণা আগে ছিল না। গোবিন্দ এখন আমার বন্ধু। ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের ফেলোশিপ নিয়ে কাজ করছি তিন মাস ধরে। এ তিন মাসে সপ্তাহে চার দিন দিনে ও রাতে একসঙ্গে থাকি। কাজের প্রয়োজনে মিশতে মিশতে বন্ধু হয়ে গেছি।’
গোবিন্দ রায় বলেন, ‘ছাত্রলীগ নেতা যে এত ভালো বন্ধু হতে পারেন, সেটি আগে ধারণাতেও ছিল না। রাজনৈতিকভাবে বিরোধিতা থাকা সত্ত্বেও আমরা এখন ভালো বন্ধু। সপ্তাহের চার দিনের বাইরেও দুজনের ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ হয়। ফাহিম ভালো কবিতা পড়েন। আর আমি নিজেও কবিতা লেখার চেষ্টা করি।’
ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শ থাকলেও উন্নয়নের স্বার্থে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে যাবেন জানিয়ে তারা বলেন, ‘রাজনীতিতে অনেক কিছু শিখলেও ঐক্যের মাধ্যমে মানুষের জন্য কল্যাণকর কিছু করা যায় তা এ কাজটির মাধ্যমে উপলব্ধি হয়েছে। ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাংলাদেশে বিরোধপূর্ণ রাজনৈতিক মানসিকতা পরিবর্তনের জন্য সংস্থাটি এ ধরনের উদ্যোগ নেয়।’
এ সময় ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক অমিত রায়, ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক নার্গিস আক্তারসহ সাংবাদিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আজকের সারাদেশ/একে