দুপুর ১২:১০, শুক্রবার, ২রা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ধর্মের কথা বলে নারীদের কেউ আটকে রাখতে পারবে না: প্রধানমন্ত্রী

আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:

এখন আর ধর্মের কথা বলে নারীদের কেউ আটকে রাখতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন ইসলাম ধর্মের কথা বলে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে নারীদের কেউ আটকে রাখতে পারবে না।’

রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শনিবার বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে পাঁচ বিশিষ্ট নারী ও তাদের স্বজনদের হাতে পদক তুলে দেন সরকারপ্রধান।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে মেয়েরা আর পিছিয়ে নেই। রাজনীতি থেকে খেলাধুলা সবক্ষেত্রে নারীরা সফলতার সঙ্গে কাজ করছে। সাংবাদিকতা থেকে শিল্পকলা সবখানেই নারীরা সফল। প্রশাসন, বিচারালয়, সশস্ত্র বাহিনীসহ সব জায়গায় কাজ করছেন তারা।’

পাকিস্তান আমলের প্রসঙ্গ টেনে সরকারপ্রধান বলেন, ‘পাকিস্তান আমলে আইন ছিল জুডিশিয়াল সার্ভিসে নারীরা অংশগ্রহণ করতে পারবেন। স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলাদেশে জাতির পিতা এ আইনগুলো পরিবর্তন করেন। তারপর থেকে আমাদের দেশের মেয়েরা জুডিশিয়াল সার্ভিসে যোগ দিতে পারছে, কিন্তু আমি সরকারের এসে দেখি আমাদের উচ্চ আদালতে কোনো নারী বিচারক নেই।

‘তখন আমি উদ্যোগ নিলাম, রাষ্ট্রপতি, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে কথা বলেছি, আইনমন্ত্রীর সঙ্গে বলেছি, উচ্চ আদালতে কোনো জজ নিয়োগ দেয়া হলে তাতে যদি কোনো নারী জজের নাম না থাকে, আমি কখনও ওই ফাইল সই করব না, রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাব না। সেই থেকে যাত্রা শুরু।’

ওই সময় একটি আফসোসের কথা উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘একটা আফসোস রয়ে গেছে আমার। খুব ইচ্ছা ছিল একজন নারীকে আমি প্রধান বিচারপতি করে যাব, কিন্তু আমাদের সমাজে এত বেশি কনজারভেটিভ, এগুলো ভাঙতে সময় লাগে। সে জন্য করতে পারিনি। এ আফসোসটা থেকে গেল।’

তিনি বলেন, ‘বেগম রোকেয়ার সময় মুসলমান মেয়েরা ঘরে অবরুদ্ধ থাকত। লেখাপড়ার কোনো সুযোগ ছিল না, তবে তার স্বামী সবসময় তাকে সহযোগিতা করেছেন, তার ভাই তাকে সহযোগিতা করেছেন। তিনি নিজের প্রচেষ্টায় উর্দু, বাংলা, আরবি, ইংরেজি, শিক্ষা যেগুলো গ্রহণ করা, সেগুলো তার স্বামীর কাছ থেকে শিখেছেন। স্বামীর কাছে আক্ষরিক জ্ঞান এবং বই পড়ার শিক্ষা গ্রহণ করেন।

‘স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি (বেগম রোকেয়া) তার ভাইয়ের কাছ থেকেও একটি অনুপ্রেরণা পান। তার স্বামীর নামে একটি স্কুল তৈরি করেন। স্কুল তৈরির পরও তাকে অনেক বাধাবিপত্তি মোকাবিলা করতে হয়। কারণ, স্বামীর নামে যে স্কুল করেছিলেন, সেখানে ছাত্রী পড়ানো যেত না। তিনি নিজের বাড়ির বাইরে গিয়ে ছাত্রী সংগ্রহ করে নিয়ে আসতেন। এটা করতে গিয়ে অনেক পরিবারের বাধা এবং অনেক প্রতিবন্ধকতা এসেছে। তিনি দমে যাননি কখনও। তার সাহসী ভূমিকা সবসময় আমরা স্মরণ করি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ডিসেম্বর আমাদের বিজয়ের মাস। ১৯৭১ সালে আমাদের মহান নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে দেশের মানুষ যুদ্ধ করেছিল; বিজয় অর্জন করেছিল। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে নারীদের অনেক অবদান আছে।

‘তারা যেমন ট্রেনিংয়ে গেছে, তেমনি যুদ্ধক্ষেত্রেও সহযোগিতা করেছে। তারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে নানা নির্যাতনের শিকার হন। অনেকে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন।’

তিনি বলেন, ‘আমি চাই নারী স্বাবলম্বী হোক। নারীরা স্বাবলম্বী হলে পরিবার ও সমাজে তার অবস্থান সুদৃঢ় হয়। সব জায়গায় তার কথার মূল্যায়ন হয়। আমরা বলতে পারি, এরই মধ্যে বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন অনেকাংশে পূরণ করতে পেরেছি।’

মায়ের স্মৃতিচারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার বাবা বেশির ভাগ সময় জেলে ছিলেন। সংসার চালানো, দল সুসংগঠিত করাসহ সব কাজই আমার মা করেছেন।’

এর আগে প্রধানমন্ত্রী পাঁচ নারীকে বেগম রোকেয়া পদক দেন। পদকপ্রাপ্তদের ১৮ ক্যারেট মানের ২৫ গ্রাম স্বর্ণের একটি পদক, পদকের রেপ্লিকা, প্রত্যেককে চার লাখ টাকার চেক ও সম্মাননাপত্র দেয়া হয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা। স্বাগত বক্তব্য দেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারেক।

আজকের সারাদেশ/০৯ডিসেম্বর/এএইচ

সর্বশেষ সংবাদ

যুবদল নেতার মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগ যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে

বাবরী মসজিদ ভাঙার পর সম্প্রীতি রক্ষায় লেখা হয় সেই ‘আলোচিত’ গান

নির্যাতনের অভিযোগে আদালতে মামলা, টাকা নিয়ে মিটমাট করতে বললেন এসআই

কবিতা: স্বাধীনতা।

ভূমি, কার্গো দখল ও ঘর ভাংচুরের ঘটনায় কবিরহাট থানায় মামলা

চবিতে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের ‘মুক্ত সংলাপ’ প্রত্যাখান শিক্ষার্থীদের, ষড়যন্ত্র না করতে দিল হুঁশিয়ারি

১৫ বছর পর মাতৃভূমিতে যুবদল নেতা হাসান নূরী

চবি উপাচার্য হিসেবে অধ্যাপক শামীম অথবা ড. আতিয়ারকে চান শিক্ষার্থীরা

ইন্টারনেট সেবা ব্যাহত হওয়ার দায় নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইলেন পলক

কোপা আমেরিকার সেরা একাদশে ৫ জনই আর্জেন্টিনার, ব্রাজিলের এক