আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:
চট্টগ্রাম থেকে মন্ত্রিত্ব পাওয়া ড. হাছান মাহমুদ (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) ও মহিবুল হাসান চৌধুরীকে (শিক্ষামন্ত্রী) অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পক্ষ থেকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার কয়েকটি দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েছেন।
বুধবার (১৭ জানুয়ারি) বিষয়টি নজরে আসলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) এই ব্যয় কোন খাত থেকে হয়েছে তা জানতে চেয়ে একটি চিঠি দিয়েছে।
ইউজিসির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের উপ-পরিচালক মো. গোলাম দস্তগীর স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বিষয়টি জানানো হয়।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, এ বিজ্ঞাপন কয়টি পত্রিকায় প্রকাশ করা হয়েছে এবং এর ব্যয় কোন খাত থেকে নির্বাহ করা হবে তার তথ্য দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের বক্তব্য আগামী ৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রেরণ করতে বলা হয়েছে।
চবি উপাচার্যের অভিনন্দন বিজ্ঞাপনে বলা হয়, “বীর চট্টলার কৃতী সন্তান ড. হাছান মাহমুদ এমপিকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী এমপিকে শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত করায় বঙ্গবন্ধু তনয়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। আমি মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীকে শুভেচ্ছা এবং প্রাণঢালা অভিনন্দন জ্ঞাপন করছি। আপনাদের সুযোগ্য নেতৃত্বে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ-২০৪১’ রূপকল্প বাস্তবায়নের পথে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। আমি আপনাদের সুস্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ু ও সর্বাঙ্গীণ কল্যাণ কামনা করছি।”
এদিকে, পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে এভাবে দুই মন্ত্রীকে অভিনন্দন জানানোর ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে সমালোচনা। গোলাম মোর্তোজা নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের পরিবহণ সংকট, আবাসনের ঠিক নেই, খাবারের মান জঘন্য। আর উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দকৃত টাকায় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে রাজনীতিবিদদের অভিনন্দন জানায়! কারা আমাদের উপাচার্য?
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের এমন কোন খাত আছে কি-না এবিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব নিয়ামক (ভারপ্রাপ্ত) মো. আমিরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি না দেখে আমি কিছু বলতে পারছি না। এটা আমার নজরে আসে নাই, আপনি বলায় জানতে পারলাম। দুইদিন থেকে আমি ছুটিতে আছি এটা জানিনা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যে বিজ্ঞাপনটি দেওয়া হয়েছে সেটার বিল এখনো আসেনি। বিল আসলে বিষয়টি জানা যাবে এটা কোন খাত থেকে ব্যয় করা হয়েছে।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, আমরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করছি। তিনি তার দোষ থেকে একটু আড়ালে যেতে এসব করছেন। কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে এমন বিজ্ঞাপন বা এ জাতীয় কিছু করতে দেখিনি আগে। উপাচার্য তার সমস্ত অপকর্মের সীমা পার করে ফেলেছেন।
আজকের সারাদেশ/এমএইচ