আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন
সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাত থেমে মুক্তির প্রায় ২০দিন পর ২৩ নাবিককে নিয়ে দেশের উদ্দেশে রওনা হলো এমভি আবদুল্লাহ। আরব আমিরাতের ফুজাইরা বন্দর থেকে জ্বালানি নিয়ে শুক্রবার (৩ মে) সকালে জাহাজটি চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা হয়েছে। আগামী ১৩ অথবা ১৪ মে জাহাজটি কুতুবদিয়ার গভীর সমুদ্রে পৌঁছাতে পারে।
জাহাজের মালিকপক্ষ কেএসআরএমের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম ও জাহাজের প্রধান কর্মকর্তা আতিক উল্লাহ খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অনেক অপেক্ষা, নির্ঘুম রাত্রীর পর স্বজনদের কাছে ফেরার যাত্রা শুরু হতেই জাহাজের নাবিকেরা উত্তেজনা আর উচ্ছ্বাসে ভাসছেন। সেই আকুলতা ধরা পড়েছে জাহাজের প্রধান কর্মকর্তা মো. আতিক উল্লাহ খানের কথায়। জাহাজের চট্টগ্রাম-যাত্রা শুরু হতেই তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নাতিদীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সেখানে আতিক উল্লাহ খান লিখেছেন, ‘হ্যালো কাছের মানুষজন,
আল্লাহর রহমতে ,অবশেষে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছি এমভি আবদুল্লাহসহ আমরা ২৩ নাবিক। সব ঠিক থাকলে ইনশাআল্লাহ আগামী ১৩-১৪ই মে চট্টগ্রাম পৌঁছাবো। জিম্মি হওয়ার পর শুধু এই দিন টার জন্য অপেক্ষা করতাম ,আর এই দিনের কথা ভেবেই মনকে শান্ত রাখার চেষ্টা করতাম। ইনশাআল্লাহ ,আর কিছু দিন পরেই আসছে সেই কাঙ্ক্ষিত মূহুর্ত।’
দেশে ফেরার এই আবেগ কোনো শব্দ দিয়েই প্রকাশ করতে পারছেন না বলে জানান আতিক উল্লাহ খান। তিনি লেখেন, ‘সত্যিই,আমি এই এক্সটাইটমেন্ট (উত্তেজনা) কখনো ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। প্রিয় মুখগুলো আবার দেখব ,তাদের সঙ্গে আবার কথা বলব,সুখ-দূঃখের অনুভূতি ভাগাভাগি করব।’ শেষে সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আতিক উল্লাহ খান লিখেছেন, ‘আল্লাহর কাছে শুকরিয়া ,তিনি আবার আমাকে সুযোগ দিয়েছেন।’
গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগর থেকে জাহাজটি ছিনতাই করেছিল দস্যুরা। ছিনতাইয়ের ৯ দিনের মাথায় দস্যুরা প্রথম মালিকপক্ষের কাছে মুক্তিপণের দাবি জানায়। এরপরই শুরু হয় দর-কষাকষি। দর-কষাকষি চূড়ান্ত হওয়ার পর ১৩ এপ্রিল সন্ধ্যার আগে মুক্তিপণের অর্থ দেওয়া হয়। এরপর ওইদিন রাত ৩টা ৮ মিনিটে এমভি আবদুল্লাহ এবং জাহাজে থাকা ২৩ নাবিক জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্তি পান। এরপর জাহাজটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হামরিয়া বন্দরের উদ্দেশে রওনা হয়। ২২ এপ্রিল সেটি আল হামরিয়া বন্দরের জেটিতে ভেড়ে। পরে সেখানে পণ্য খালাস শেষে ২৭ এপ্রিল দেশটির মিনা সাকার বন্দরে যায় জাহাজটি। সেখান থেকে পাথর বোঝাই করার পর ৩০ এপ্রিল ফুজাইরা বন্দরে যায় জ্বালানি সংগ্রহ করতে। সবশেষ জ্বালানি নিয়ে আজ দেশের পথে রওনা হলো।