আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন
সেন্ট মার্টিন দ্বীপে যাওয়া-আসার একমাত্র পথ নাফ নদী। বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপে প্রায় ১০ হাজার মানুষের বসবাস। তবে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘাতে একের পর এক গুলিবর্ষণের ঘটনায় টানা ছয় থেকে সাত দিন ধরে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে বন্ধ রয়েছে নৌ চলাচল।
খাদ্য ও পণ্যবাহী বোট চলাচল বন্ধে দ্বীপে খাদ্য পৌঁছাতে না পারায় ও মজুদকৃত খাবার প্রায় শেষ হয়ে যাওয়ায় খাদ্য সংকটে ভুগছেন সেন্টমার্টিনের বাসিন্দারা।
কোনো কারণ ছাড়াই বাংলাদেশি নৌযান লক্ষ্য করে দফায় দফায় গুলি ছোড়ার ঘটনায় মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবাদপত্র পাঠাচ্ছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তাতে কাজ হচ্ছে না। সর্বশেষ গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রোগীবাহী একটি স্পিডবোট লক্ষ্য করে মিয়ানমার থেকে ১০-১২টি গুলি ছোড়া হয়। কয়েকটি গুলি স্পিডবোটে লাগলেও অল্পের জন্য যাত্রীরা প্রাণে রক্ষা পান।
এর আগে ৮ জুন দুপুরে টেকনাফ থেকে সেন্ট মার্টিনগামী পণ্যবাহী একটি ট্রলারে ৩০-৪০টি গুলিবর্ষণ করে মিয়ানমার সশস্ত্র গোষ্ঠী। তাতে কেউ হতাহত না হলেও ট্রলারটির বিভিন্ন স্থানে সাতটি গুলি লাগে।
সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মুজিবুর রহমান বলেন, রাখাইন রাজ্যের নাইক্ষ্যংদিয়া থেকে দফায় দফায় গুলিবর্ষণের ঘটনায় গত সাত দিন ধরে টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথে যাত্রীবাহী নৌযানের চলাচল বন্ধ রয়েছে। তাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ হতদরিদ্রদের ভিজিডি ও ভিজিএফ চালও সেন্ট মার্টিনে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। ওপারের গুলিবর্ষণ বন্ধ না হলে দ্বীপের ১০ হাজার মানুষের দুর্ভোগ বাড়বে। নৌ চলাচল স্বাভাবিক করতে নাফ নদীর বদরমোকাম এলাকায় বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ও বিজিবির টহল জোরদার করা জরুরি বলে মন্তব্য করেন ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান।
টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশি নৌযান লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বিজিবির কাছে প্রতিবাদলিপি পাঠানো হয়। কিন্তু গোলাগুলি বন্ধ হচ্ছে না।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, মিয়ানমারের দিক থেকে কারা গুলি ছুড়ছে, আরাকান আর্মি নাকি বিজিপি, তা নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। সংকটের অবসান না হওয়া পর্যন্ত টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথে নৌ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।