আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন
ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো- দেড় দশকের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ভেঙেছেন অনেক রেকর্ড, গড়েছেন ইতিহাসও। বিশ্বজুড়ে অনেক উঠতি খেলোয়াড়ের রোল মডেল তিনি। তার প্রতিটি গোল, প্রতিটি অর্জন নিজেদের মনে করে উদযাপন করেন বিশ্বের কোটি কোটি ভক্ত।
তবে ৩৯ বছর বয়সী এ ফুটবল তারকা জানান, ২০২৪ সালের ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ পর্তুগালের জাতীয় দলের জার্সিতে তার শেষ বড় টুর্নামেন্টে। এরপরই অবসরে যাবেন তিনি।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) ইউরোর শেষ ষোলোতে পর্তুগাল-স্লোভেনিয়া ম্যাচ নির্ধারিত সময়ে গোলশূন্য অবস্থায় শেষ হয়। ফলে অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে গড়ায় খেলা। অতিরিক্ত সময়ের খেলায় তখন বিরতি। মাঠের এক পাশে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়িয়ে পর্তুগালের খেলোয়াড়রা। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো তখন কাঁদলেন শিশুর মতো। রোনালদোর কান্নার কারণ ১০৫ মিনিটে নেওয়া পেনাল্টিটাও হলো মিস। পেনাল্টি মিস করে এভাবে (রোনালদোর মতো) কান্না করার দৃশ্য বিরলই বটে।
ইতিহাসের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলে পেনাল্টিতে দেড়’শ গোলের মাইলফলক ছোঁয়া, সর্বশেষ ১৩ পেনাল্টিতেই গোল করা রোনালদো পেনাল্টিতে গোল করতে পারেননি! আর তাই হতাশা হন রোনালদো। তবে শেষ পর্যন্ত পর্তুগাল ম্যাচটা জিতেছে তাদের গোলকিপার কস্তার বীরত্বে। টাইব্রেকারে পর্তুগাল ৩-০ ব্যবধানে হারিয়েছে স্লোভেনিয়াকে। টাইব্রেকারে টানা তিনটি শট ঠেকিয়েছেন পর্তুগিজ গোলকিপার কস্তা।
পর্তুগালের হয়ে টাইব্রেকার নেওয়ার সময় আর ভুল করেননি রোনালদো। বল পাঠিয়েছেন জালে এরপর উদযাপনটা করেন ক্ষমা চাওয়ার ভঙ্গিতে। অতিরিক্ত সময়ে পেনাল্টি মিস করার কারণেই এই ক্ষমা চাওয়া রোনালদোর। তবে কোয়ার্টার ফাইনালের পর অবসর নিয়ে মুখ খুলেছেন পর্তুগিজ তারকা ক্রিশ্চিয়ান রোনালদো। স্লোভেনিয়ার বিপক্ষে টাইব্রেকে শ্বাসরুদ্ধকর জয়ের পর অবসরের কথা জানিয়েছেন তিনি।
পর্তুগিজ পত্রিকা ও জোগোকে দেয়া প্রতিক্রিয়ায় রোনালদো বলেন, ‘কোন সন্দেহ ছাড়াই এটা আমার শেষ ইউরো কাপ।’ রোনালদোর আর নিজেকে প্রমাণের কিছু নেই। এমনটাই মনে করে এই ইউরো জয়ী ফুটবলার বলেন, `ফুটবল ছেড়ে দেওয়াটা বিষয় নয়, আমার এখানে জয় ছাড়া অন্য কি বিকল্প আছে? এখানে আমরা এক পয়েন্ট বেশি বা কমের জন্য আসিঞ্জ। মানুষকে খুশি করতে পারাটাই আমাকে অনুপ্রেরণা দেয়।‘
স্লোভেনিয়ার গোলকিপার ইয়ান ওবলাক তার পেনাল্টি রুখে দেন। এ নিয়েও কথা বলেন তিনি, ‘প্রথমে বিষয়টি দুঃখের ছিল। তবে শেষে তা আনন্দে রূপ নেয়। ফুটবলে এমনই হয়। মাঝেমধ্যে এমন কিছু মুহূর্ত আসে যা আপনি ব্যাখ্যা করতে পারবেন না। আবার সেটাই সবকিছুই নয়। আমি এ পেনাল্টিকে দারুণ সুযোগ হিসেবে নিয়েছিলাম। তবে ওবলাক এটি রুখে দেয়।’
জাতীয় দলে নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলের সর্বোচ্চ গোলদাতা বলেন, ‘ইউরো টুর্নামেন্টে এটিই আমার শেষ উপস্থিতি। এটি কেবল আমাকে শক্তি জোগায় না, বরং উৎসাহও দেয়। আমি আমার দর্শকদের জন্য দুঃখিত। এ জার্সির জন্য আমি নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। সারাজীবন তাই করব। তবে তোমাকেও (সতীর্থদের) দায়িত্ব নিতে হবে।’
পতুর্গাল তো বটেই বিশ্বকাপের ফুটবলের সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনি। ২১১ ম্যাচে তার গোল ১৩০। কিন্তু চলতি ইউরো কাপে এখন পর্যন্ত গোল করতে পারেননি রোনালদো।
শেষ আটে ফ্রান্সের মুখোমুখি হবে পর্তুগাল। আগের ম্যাচে বেলজিয়ামকে হারিয়ে শেষ আট নিশ্চিত করেছে ফরাসিরা।