আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) নাট্যকলা বিভাগের তালাত মাহমুদ রাফি নামে এক শিক্ষার্থীকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
হুমকি দেওয়া অভিযুক্ত ব্যক্তি হলেন হৃদয় আহমেদ রিজভী। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বগিভিত্তিক চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ার (সিএফসি) গ্রুপের কর্মী।
তালাত মাহমুদ রাফি জানান, আন্দোলনে সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করার কারণে কিছু প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছেন তারা। রোববার রাত সাড়ে ১০টায় তার বাবার কাছে ফোন দিয়ে এক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করে তাকে হত্যার হুমকি দেয়। আন্দোলন থেকে সরে না আসলে তাকে হত্যার পর লাশ গুম করে ফেলা বা অ্যাম্বুল্যান্সে করে লাশ পাঠানোর হুমকি দেয় তার পরিবারকে। তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, এই মুহূর্তে আমি নিরাপত্তার অভাবে ভুগছি। জানতে পেরেছি, হুমকি দেওয়া ব্যক্তি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
সোমবার সন্ধা সাতটায় রাফি বলেন, এ ঘটনায় আমি এখনো সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করিনি তবে আমার পরিবার নরসিংদীতে এবং আমি এখানে ডায়েরি করার ইচ্ছা আছে। এছাড়া সোমবার আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি এ ব্যাপারে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হুমকিদাতা চবি ছাত্রলীগের বগিভিত্তিক সিএফসি গ্রুপের কর্মী। বিশ্ববিদ্যালয়ে এই গ্রুপের কর্মীরা শাহ আমানত হলে থাকেন। হৃদয় এই হলে ৩১৩ নম্বর কক্ষে থাকেন বলে জানা গেছে।
হুমকির বিষয়ে জানতে চেয়ে হৃদয়কে ফোনে যোগাযোগ করতে চাইলে সাড়া পাওয়া যায়নি। জানতে চাইলে সিএফসি গ্রুপের নেতা ও চবি ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সহ-সভাপতি মির্জা খবির সাদাফ বলেন, এই নামে কাউকে আমি চিনি না। তার সঙ্গে ছাত্রলীগের নাম জড়াবেন না।
হাইকোর্টের দেওয়া রায় এ কোটা পূণর্বহালের প্রতিবাদে গত সোমবার থেকে আন্দোলন করে যাচ্ছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গত পাঁচদিন ধরে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করছেন তারা। যতই দিন যাচ্ছে আন্দোলন বেগবান করে তুলেছেন শিক্ষার্থীরা। ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলেন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ অহিদুল আলম বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ওই শিক্ষার্থীকে থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
শিক্ষার্থীরা চার দাবি নিয়ে এ কর্মসূচি পালন করছেন। এগুলো হলো- ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটাপদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখা; পরিপত্র অনুযায়ী দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সব গ্রেডে) বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে (পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী ছাড়া); সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটাসুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।