আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন
দেশে আলুর সর্বোচ্চ বার্ষিক চাহিদা ৮০ লাখ টন। আর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দেশে আলু উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ১০ লাখ টনের কাছাকাছি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের এ পরিসংখ্যান বলছে, গত অর্থবছরে বাংলাদেশে আলু উৎপাদন হয়েছে চাহিদার চেয়ে অন্তত প্রায় ৩০ লাখ টন বেশি। আর কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, এসব আলু উৎপাদনে কেজিপ্রতি খরচ পড়ে মাত্র ১০ টাকা ৫১ পয়সা। যদিও রাজধানীর খুচরা বাজারে এখন প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা দরে। শুধু তাই নয়, বাজারে পণ্যটির দাম এখন গত বছরের তুলনায় প্রায় ২০-২৫ টাকা বেশি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, আলুর মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতা অবিশ্বাস্য রকম বেশি। তাদের ভাষ্যমতে, কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য সঠিক হলে উৎপাদনের পর ১০-১৫ শতাংশ নষ্ট হওয়ার পরও দেশে উদ্বৃত্ত আলু থাকার কথা। আবার আমদানিতেও বাধা নেই। সে হিসেবে দামও কম হওয়ার কথা। কিন্তু বাজারের চিত্র বলছে ভিন্ন কথা। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে গতকাল পাইকারিতে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হয়েছে ৫৪ টাকা দরে। আর খুচরায় তা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা দরে।
কৃষি ও খাদ্যপণ্যের বাজার পর্যবেক্ষকদের ভাষ্যমতে, আলুর উৎপাদন খরচের অতিরিক্ত মূল্যের বেশির ভাগই চলে যাচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীদের কাছে। এক্ষেত্রে কোল্ড স্টোরেজ মালিক ও ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে দরের এ পরিস্থিতি হয়ে থাকতে পারে বলে সন্দেহ করছেন বিশ্লেষকদের একাংশ। আবার কেউ কেউ বলছেন, উৎপাদনের সরকারি তথ্য নিয়েও বড় ধরনের সংশয় রয়েছে। সঠিক তথ্য না থাকায় সার্বিকভাবে বাজার ব্যবস্থাপনা কঠিন হয়ে পড়ছে, যা আলুর অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির পেছনে বড় ভূমিকা রাখছে।
কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম খান বলেন, ‘কেজিতে ১৫-২০ টাকার বেশি কৃষক পান না। সে হিসেবে বাজারে আলুর দাম হতে পারত কেজিপ্রতি ২৫-৩০ টাকা। কিন্তু এটা ৩৫ টাকার বেশি হলেও বুঝতে হবে এখানে কারসাজি হচ্ছে। উৎপাদনও পর্যাপ্ত না। এটা বেশি দেখানো হয়েছে। এটার প্রভাব পড়ছে বাজারে। ব্যবসায়ী ও কোল্ড স্টোরেজ মালিকরা সিন্ডিকেট করছে। মজুদদারি করায় বাজারে সরবরাহ ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ফলে দাম বেড়ে গেছে।’