ভোর ৫:১৯, রবিবার, ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শখের বসে ৩০ বছর ধরে কাচের বাল্ব চিবিয়ে খান রাজশাহীর মুক্তার

আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন

৬০ ও ১০০ ওয়াটের বৈদ্যুতিক বাল্ব ভেঙে স্বচ্ছ কাচের টুকরো কড়মড় করে চিবিয়ে খান মুক্তার হোসেন। তিনি রাজশাহী নগরীর ভদ্রা চকপাড়ার বাসিন্দা। পেশায় একজন ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক।

তার ভাষ্যমতে, তিনি গত ৩০ বছর ধরে কাঁচ চিবিয়ে খান। ভাত, মাছ, মাংস না পেয়ে তিনি কাচ খান, বিষয়টি এমন নয়। তিনি কাচ খান শখ ও অভ্যাসের কারণে।

চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে, এটি খাদ্যগ্রহণ সংক্রান্ত এক ধরনের মানসিক রোগ, যার নাম ‘পাইকা’। পাইকা ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত ব্যক্তির অখাদ্য গ্রহণ অভ্যাসে পরিণত হয়। মূলত পুষ্টিগুণবিহীন কোনো বস্তু খাওয়ার তীব্র ইচ্ছা এবং সেই বস্তু ক্রমাগত খেতে থাকাই হলো পাইকা।

মুক্তার হোসেন বলেন, ‘৩০ বছর আগে ঢাকার মিরপুরের শাহ আলীর দরবারে আমার পীর মুর্শিদ ওয়াজ ভান্ডারীর কাছে গিয়েছিলাম। সেখানে ঘুরে বেড়ানোর এক পর্যায়ে মুর্শিদ ওয়াজ ভান্ডারীকে দেখি তিনি কাচ খাচ্ছিলেন। তার সাথে কথা বলার এক পর্যায়ে তাকে বলি ‘বাবা আমিও আপনার মতো কাচ খাব’। তখন মুর্শিদ ওয়াজ ভান্ডারী বলেছিলেন তিন বছর থাকতে হবে এখানে। তারপরে কাচ খাওয়া শেখানো হবে। সেখানে তিন বছর ধরে সাধনা করার পর আমি কাচের বাল্ব খাওয়া শিখেছি। এরপর নিয়মিতভাবে একনাগাড়ে ২৫ বছর ধরে কাচের বাল্ব খেয়েছি। তবে গত ৫ বছর ধরে তেমন খাই না।’

তিনি আরও বলেন, আমার কাচের বাল্ব খাওয়ার বিষয়টি গোপন ছিল। এটা আমার সাধনা। কিন্তু এক বন্ধু এক বছর আগে বিষয়টি জেনে ফেলে। এরপর থেকে আমাকে বারবার বলছিল, কাচ খাওয়া দেখানোর জন্য। এ কারণে তার সামনে কাঁচের বাল্ব খেয়েছি। সে ভিডিও করে ওইটা ফেসবুকে দিয়ে দিয়েছে। এ কারণে এলাকার মানুষ জেনে গেছে। কাচের বাল্ব খেয়ে এখন পর্যন্ত আমার শারীরিক কোনো সমস্যা হয়নি। আমি অনেক সাধনার পর কাচ খাওয়ার কৌশল রপ্ত করেছি। এটা ঝুঁকিপূর্ণ। তারপরও শখের বসে এটা খাই। কাচ খেতে আমার ভালো লাগে। আমি সাধারণত নষ্ট হওয়া ৬০ থেকে ১০০ ওয়াটের বাল্বগুলো খাই।

মুক্তার জানান, তিনি পীরের মুরিদ। রাজশাহী নগরীর ভদ্রা জামালপুর এলাকার হযরত শাহ ওলি আহম্মেদের (রহ:) মুরিদ তিনি। মাজার শরীফে নিয়মিত যান তিনি। তার এই কাচ খাওয়া দেখে রাজু আহম্মেদ নামের আরেক যুবক কাচ খাওয়ার শিক্ষা নিতে মুক্তার হোসেনের পেছনে ছুটছেন।

রংপুর থেকে কাচ খাওয়ার কৌশল শিখতে এসেছেন রাজু আহম্মেদ। তিনি বলেন, আমিও পীরের মুরিদ। তার কাচ খাওয়া দেখে আমার ভালো লেগেছে। আমিও কাচ খাওয়া শিখতে চাই। এখানে আসার পরে মুক্তার আলী আমাকে শেখাতে চাননি। তারপরেও তার সাথে ঘুরছি। তিনি না শেখেলে বাড়ি ফিরে যাব।

এদিকে, মুক্তার হোসেনের এই কাঁচ খাওয়া নিয়ে এলাকায় নানা আলোচনা-সমালোচনা তৈরি হয়েছে। ভদ্রা জামালপুর আওয়ামী লীগের মহল্লা কমিটির নেতা রাশেদুজ্জামান রাইস বলেন, এটা ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। এতে তার শারীরিক সমস্যা হয় না বলেই জানাচ্ছেন। তেমনি যদি হয়ে থাকে, তাহলে তার সাধনাকে মূল্যায়ন করাও যেতে পারে।

এ বিষয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ ডা. শঙ্করকে বিশ্বাস বলেন, কাঁচের বাল্ব কোনো খাদ্য নয়। এটা তার মানসিক রোগ। উনি হয়তো দীর্ঘ সময় ধরে এটি খেয়ে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন। কিন্তু এটায় তার মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি ছাড়াও ক্যান্সার হতে পারে। এই মুর্হূতে তার চিকিৎসা প্রয়োজন।

সর্বশেষ সংবাদ

চবিতে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের ‘মুক্ত সংলাপ’ প্রত্যাখান শিক্ষার্থীদের, ষড়যন্ত্র না করতে দিল হুঁশিয়ারি

১৫ বছর পর মাতৃভূমিতে যুবদল নেতা হাসান নূরী

চবি উপাচার্য হিসেবে অধ্যাপক শামীম অথবা ড. আতিয়ারকে চান শিক্ষার্থীরা

ইন্টারনেট সেবা ব্যাহত হওয়ার দায় নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইলেন পলক

কোপা আমেরিকার সেরা একাদশে ৫ জনই আর্জেন্টিনার, ব্রাজিলের এক

গুলিবিদ্ধ কিশোরকে রিকশায় তুলতে গিয়ে দেখলেন নিজেরই সন্তান

নিরপরাধ শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করবে চবি কর্তৃপক্ষ

১২ দিন পর স্বল্প পরিসরে ট্রেন সার্ভিস চালু

ইসমাইল হানিয়ার মৃত্যুর পর ইসরায়েলে হামলার নির্দেশ আয়াতুল্লাহ খামেনির

বন্দিতে ঠাসা চট্টগ্রামের কারাগার, ১৫ দিনে বেড়েছে ১ হাজার বন্দী