আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:
নতুন উপাচার্য নিয়োগের প্রথম দিনেই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কেএম নূর আহমদকে ‘ছাত্রলীগের বাইরে সকল নিয়োগ ক্যান্সেল’ বলে হুমকি দিতে দেখা যায় চবি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের।
বুধবার (২০ মার্চ) চবির নতুন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের দায়িত্ব গ্রহণ করার পরপরই দুপুর দেড়টার দিকে রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
এসময় সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের সময় নিয়োগ পাওয়া এক ব্যক্তিকে বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী রেজিস্ট্রার অফিসে মারধর করেন। পাশাপাশি রেজিস্ট্রারকে ছাত্রলীগ ছাড়া বাকি সব নিয়োগ ক্যান্সেল করতে হুমকি দেন।
জানা গেছে, ভুক্তভোগী ইয়াহিয়া টিপু দৈনিক ৫৫০ টাকা মজুরিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগে কম্পিউটার ল্যাব সহকারী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন সম্প্রতি। বুধবার (২০ মার্চ) রেজিস্ট্রার অফিসে তিনি জয়েন করতে এলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হাতে মারধরের শিকার হোন।
ইয়াহিয়া টিপু বলেন, আমার চাকরি হয়েছে। সেজন্য তারা আমাকে মারছে। আমি জয়েন করতে আসছিলাম রেজিস্ট্রার অফিসে। আমাকে জিজ্ঞেস করছে, আমি ছাত্রলীগ করি কি-না। ‘না’ উত্তর দেওয়ায় তারা আমাকে মারধর করে।
ছাত্রলীগ কর্মীদের বাইরে সকল নিয়োগ ক্যান্সেল করতে রেজিস্টারকে প্রথমে শাসাতে থাকেন শাখা ছাত্রলীগের উপগ্রুপ ‘বিজয়’ এর অনুসারী ওয়াহিদুল ইসলাম। তিনি রেজিস্ট্রারকে বলেন, “এখনো পিছনে বসে আছে সে। সে ছাত্রলীগ করে না। তবুও ওরে চাকরি দিয়েছেন। ওর কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ খাইছে ভিসি ম্যাম।”
এরপর বিজয় গ্রুপের আরেক অনুসারী শাখা ছাত্রলীগের সাবেক আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোরশেদুল আলম রিফাত রেজিস্ট্রারকে বলেন, “ছাত্রলীগের বাইরের সব চাকরি ক্যান্সেল। ছাত্রলীগের পোলারে নিয়োগ দিলে সমস্যা নাই। ছাত্রলীগের বাইরে যেগুলা, ওইগুলা ক্যান্সেল। ছাত্রলীগের পোলাপানের চাকরি নেওয়ার অধিকার আছে। বাইরের পোলাপানের কী অধিকার? ছাত্রলীগের বাইরে সব ক্যান্সেল।”
এসময় উপস্থিত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে উপাচার্যকে এসব নিয়োগের ব্যাপারে বলার জন্য তাদের পক্ষে রেজিস্ট্রারকে বুঝাতে থাকেন চবি কর্মচারী ইউনিউনের সভাপতি মো. সুমন মামুন ও সাধারণ সম্পাদক মো. মনসুর আলী।
এসময় ছাত্রলীগের অনুসারীদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন, শাখা ছাত্রলীগের একাকার গ্রুপের নেতা মইনুল ইসলাম রাসেল, ভিএক্স গ্রুপের আল-আমিন শান্ত, রায়হান ও আশিব তানিম।
এসময় রেজিস্ট্রার অফিসে উপস্থিত ছিলেন, চবিন সহকারী প্রক্টর নাজেমুল আলম মুরাদ, মোহাম্মদ রোকন উদ্দিন, আব্দুল মান্নান ও শঙ্কর বড়ুয়া।
চবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কেএম নূর আহমদ বলেন, আমার অফিসে এসে তারা এরকম আচরণ করেছে। এটা আমার জন্য অপমানজনক। আমি তো তাদের নিয়োগ দিতে পারবো না। নিয়োগ দিবে ভিসি। তবুও তারা আমার এখানে এসে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছে।
আজকের সারাদেশ/এমএইচ