আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন
টানা ৩২ বছর কারাগারে থাকা আলোচিত জল্লাদ শাহজাহান ভূঁইয়া মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
সোমবার (২৪ জুন) ভোরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
সোমবার বিকেলে জল্লাদ শাহজাহানের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার বোন ফিরোজা বেগম। তিনি বলেন, আমরা খবর পেয়ে মরদেহ গ্রহণ করতে দুপুরে হাসপাতালে পৌঁছেছি। হাসপাতাল থেকে মরদেহ নিয়ে গ্রামের বাড়ি পলাশের ইছাখালীতে নিয়ে আসা হবে। পরে সেখানে তার জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হবে।
নিহতের স্বজনরা জানান, সাভারের হেমায়েতপুরের কাশেম আলীর একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন শাহজাহান। সেখানে আজ ভোরে তার বুকে ব্যথা ওঠে। পরে বাড়ির মালিক রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে আসলে ভোর সাড়ে ৫টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
ডিএমপির শেরেবাংলা নগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সজীব দে জানান, ভোর ৫টার দিকে জল্লাদ শাহজাহানকে হেমায়েতপুর থেকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার বাড়ির মালিক। বুকে ব্যথা অনুভব করায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় শাহজাহানকে। হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
জানা যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৬ ঘাতক, ৬ জন যুদ্ধাপরাধী, কুখ্যাত সন্ত্রাসী এরশাদ শিকদার, জঙ্গি নেতা বাংলাভাই, আতাউর রহমান সানী, শারমীন রীমা হত্যার আসামি খুকু মনির, ডেইজি হত্যা মামলার আসামি হাসানসহ আলোচিত ২৬ জনের ফাঁসি কার্যকর করেছেন শাহজাহান। ২০০১ সাল থেকে তিনি ফাঁসি কার্যকর শুরু করেন।
শাহজাহান ভূঁইয়া নরসিংদীর পলাশ উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের ইছাখালী গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবার নাম হাছেন আলী ভূঁইয়া। নানান অপরাধে গ্রেপ্তারের পর শাহজাহান ১৯৯১ সালের ১৭ ডিসেম্বর মানিকগঞ্জ জেলা কারাগারে যান। ২০২৩ সালের ১৮ জুন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। ৭৪ বছর বয়সী শাহজাহান কারাভোগ শেষে মুক্তি পাওয়ার পর এক তরুণীকে বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু কয়েক মাস সংসার কর পর তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়।
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার ৬ আসামি লে. কর্নেল সৈয়দ ফারুক রহমান, লে. কর্নেল সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, মেজর বজলুল হুদা, লে. কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ (আর্টিলারি) ও লে. কর্নেল এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদ (ল্যান্সার) ও ক্যাপ্টেন (অব.) আবদুল মাজেদের ফাঁসিও দেন ‘জল্লাদ’ শাজাহান।
এছাড়া ৪ যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসিও দিয়েছেন ‘জল্লাদ’ শাজাহান। মানবতাবিরোধী অপরাধী আবদুল কাদের মোল্লা, সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী, আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ ও মীর কাসেম আলীরও ফাঁসি দিয়েছেন তিনি।