আজকের সারাদেশ রিপোর্ট:
দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে কক্সবাজারের টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল। নাফ নদীতে ডুবোচর ও নাব্যতা সংকটকে দায়ী করছে প্রশাসন। তবে সংশ্লিষ্ট জাহাজ মালিকদের অভিযোগ, সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যতটকদের পরিবহনের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করছে ঢাকাকেন্দ্রিক সিন্ডিকেট।
টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথে বন্ধ থাকা জাহাজের মালিকদের অভিযোগ, কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম থেকে একাধিক বিলাসবহুল জাহাজে চড়ে হাজারো পর্যটক সেন্ট মার্টিনে ভ্রমণে যাচ্ছেন। কিন্তু বিভিন্ন অজুহাতে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা সুযোগ পাচ্ছেন না। এতে বিপাকে পড়েছেন এ নৌপথে চলাচলকারী জাহাজ, স্পিডবোট, কাঠের ট্রলারসহ টেকনাফের দোকানপাটের ব্যবসায়ীরা।
অন্যদিকে টেকনাফ থেকে জাহাজ বন্ধ থাকায় ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে দ্বিগুণ খরচে সেন্টমার্টিন দ্বীপে যেতে হচ্ছে পর্যটকদের। সময়ও লাগছে বেশি।
সেন্টমার্টিন দ্বীপ ইনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানান, কোন ধরণের পূর্বঘোষণা ছাড়াই চলতি মৌসুমে টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথে জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে ১০ বছর ধরে চলাচলকারী ১০টি জাহাজ, শতাধিক স্পিডবোট, কাঠের ট্রলারসহ টেকনাফের দোকানপাটের ব্যবসায়ীরা পথে বসেছেন। টেকনাফের দমদমিয়া জেটিঘাট, টেকনাফ পৌরসভা, শাহপরীর দ্বীপ, সেন্ট মার্টিন দ্বীপের জেটিঘাট, সমুদ্রসৈকতসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় তিন হাজার দোকানপাট বন্ধ রয়েছে।
টেকনাফের ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, নাফ নদীতে নাব্যতা-সংকটের কথা বলা হলেও মিয়ানমার থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরে আমদানি পণ্যবোঝাই জাহাজ আসা–যাওয়া করছে নিয়মিত। তারা বলছেন, নাব্যতা–সংকট হলে টেকনাফের পশ্চিম সৈকতের সাবরাং পয়েন্ট দিয়ে সেন্ট মার্টিনে জাহাজ চলাচল চালু রাখা যেত।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে কক্সবাজার-সেন্ট মার্টিন নৌপথে এম ভি কর্ণফুলী এবং চট্টগ্রাম-সেন্ট মার্টিন নৌপথে বে ওয়ান জাহাজ চলাচল করে। জাহাজ দুটি একই প্রতিষ্ঠানের। কর্ণফুলী জাহাজের কক্সবাজারের ব্যবস্থাপক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, টেকনাফে জাহাজ চলাচল বন্ধের সঙ্গে জাহাজ দুটি চলাচলের কোনো সম্পর্ক নেই।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান জানান, নাব্যতা–সংকটের কারণেই জাহাজ চলাচল বন্ধ রয়েছে। এই নৌপথে জাহাজ চালুর বিষয়ে সরকারি নির্দেশনা তিনি পাননি। বিকল্প পথে টেকনাফ থেকে জাহাজ চালুর বিষয়ে ঊর্ধ্বতন মহলের নির্দেশনা পেলে জাহাজ চালাতে সমস্যা নেই।
নাফ নদীতে ডুবোচর ও নাব্যতা সংকটের কারণে গত ১ নভেম্বর থেকে এ রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ রয়েছে।