সকাল ৭:০১, শুক্রবার, ১২ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিত্যপণ্য ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদসহ ১০ দফা দাবিতে ১৬ জানুয়ারি বিএনপির বিক্ষোভ

আজকের সারাদেশ রিপোর্ট:

১০ দফা দাবি আদায় এবং বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে আগামী ১৬ জানুয়ারি দেশব্যাপী গণমিছিল কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। এ কর্মসূচি সারাদেশের প্রতি জেলা-উপজেলায় পালন করা হবে।

বুধবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি থেকে এ ঘোষণা দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে আজকের এই গণঅবস্থান কেন্দ্রীয় গণঅবস্থানে পরিণত হয়েছে। আমাদের সহযোদ্ধারা অবর্ণনীয় কষ্টে কারাগারে রয়েছেন। গত ৭ ডিসেম্বরের এখানে আমাদের এক সহযোদ্ধাকে শহীদ করা হয়েছে; এ পর্যন্ত আমাদের ১৫ জন নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন।”

তিনি অভিযোগ করেন, “মিথ্যা মামলায়’ বেগম খালেদা জিয়াকে গৃহবন্দী করা রাখা হয়েছে। ১৫ বছর ধরে তারেক রহমানকে নির্বাসনে রাখা হয়েছে। আজকে সরকার আমাদের গণঅবস্থান কর্মসূচিতে হামলা চালিয়ে সমাবেশ পণ্ড করেছে।”

“রুহুল কবির রিজভী, আব্দুস সালাম, খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীসহ অসংখ্য নেতাকর্মীদেরকে কারাগারে বেআইনিভাবে রাখা হয়েছে। আওয়ামী লীগ বেআইনিভাবে ক্ষমতা রয়েছে। তারা এখন আর রাজনৈতিক দল নয়, তারা রাজনৈতিক দলের সকল চরিত্র হারিয়ে ফেলেছে।”

তিনি আরো বলেন, “তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে এবং ১০ দফা দাবি মনে নিতে হবে। চাল-ডালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমাতে হবে। সরকারের কর্মকর্তারা আজ হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। প্রত্যেকটি ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে,”

এর আগে বুধবার (১১ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় নিজেদের কর্মসূচি শুরু করে বিএনপি। ঢাকাসহ ১০ বিভাগীয় শহরে একযোগে এ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। এ সময় কাকরাইলের নাইটিংগেল মোড় থেকে মতিঝিলের আরামবাগ পর্যন্ত বিএনপির নেতাকর্মীরা জড়ো হন।

আগেরদিন বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. গোলাম ফারুকসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে ডিএমপি সদর দপ্তরে একটি বৈঠকে অংশ নেয়। বৈঠক শেষে কয়েকটি শর্তে বিএনপিকে কর্মসূচির অনুমতি দেওয়া হয়।

তবে বিএনপির আজকের গণঅবস্থান কর্মসূচি ঘিরে রাজধানীতে সতর্ক অবস্থান নিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। সকাল থেকেই বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এছাড়া সকাল থেকে শাহবাগে অবস্থান নিয়েছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

সরকারবিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে গত ৩০ ডিসেম্বর বিএনপি একযোগে ১১ জানুয়ারি (আজ) ঢাকাসহ ১০টি বিভাগীয় শহরে গণঅবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয়।

অন্যদিকে বিএনপির গণঅবস্থান কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ঢাকার প্রবেশমুখ সাভারের আমিনবাজারে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি কার্যক্রম চালাচ্ছে পুলিশ। সকাল ৭টা বেলা ১১ টা পর্যন্ত চেকপোস্ট থেকে ৯টি হাইয়েস মাইক্রোবাসসহ অন্তত ৯০ জনকে আটক করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তবে, এখনই কাউকে আটক বলতে রাজি নয় পুলিশ, তারা বলছেন সন্দেহভাজন হিসাবে যাদের থামানো হচ্ছে, তাদের বিষয়ে যাচাই-বাছাই চলছে। তাছাড়া, চেকপোস্ট থেকে সন্দেহভাজন হিসাবে ঠিক কতজনকে আটক করা হয়েছে সেই সংখ্যাও প্রকাশ করা হয়নি।

বিএনপির ১০ দফায় কী আছে?

১. বর্তমান জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করে ক্ষমতাসীন সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে।

২. ১৯৯৬ সালে সংবিধানে সংযোজিত ধারা ৫৮ খ, গ ও ঘ-এর আলোকে একটি দলনিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার/অন্তর্বর্তীকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করতে হবে।

৩. নির্বাচনকালীন দলনিরপেক্ষ সরকার/অন্তর্বর্তীকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার বর্তমান অবৈধ নির্বাচন কমিশন বাতিল করে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করবে। এই নির্বাচন কমিশন অবাধ নির্বাচনের পূর্বশর্ত হিসেবে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আরপিও সংশোধন, ইভিএম পদ্ধতি বাতিল ও পেপার ব্যালটের মাধ্যমে ভোটের ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার বাতিল করতে হবে।

৪. খালেদা জিয়াসহ সব বিরোধীদলীয় নেতাকর্মী, সাংবাদিক এবং আলেমদের সাজা বাতিল, সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও রাজনৈতিক কারাবন্দিদের অনতিবিলম্বে মুক্তি, দেশে সভা-সমাবেশ ও মত প্রকাশে কোনো বাধা সৃষ্টি না করা, সব দলকে স্বাধীনভাবে গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনে প্রশাসন ও সরকারি দলের কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ বা বাধা সৃষ্টি না করা, স্বৈরাচারী কায়দায় বিরোধী কণ্ঠস্বরকে স্তব্ধ করার লক্ষ্যে নতুন কোনো মামলা ও বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার না করা।

৫. ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এবং বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪-সহ মৌলিক মানবাধিকার হরণকারী সব কালাকানুন বাতিল করতে হবে।

৬. বিদ্যুৎ, জ্বালানি, গ্যাস, সার ও পানিসহ জনসেবা খাতের মূল্যবৃদ্ধির গণবিরোধী সরকারি সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে।

৭. নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনতে হবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারকে সিন্ডিকেটমুক্ত করতে হবে।

৮. গত ১৫ বছর ধরে বিদেশে অর্থ পাচার, ব্যাংকিং ও আর্থিক খাত, বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাত ও শেয়ার বাজারসহ রাষ্ট্রীয় সব ক্ষেত্রে সংঘটিত দুর্নীতি চিহ্নিত করতে একটি কমিশন গঠন/দুর্নীতি চিহ্নিত করে অতি দ্রুত যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

৯. গত ১৫ বছরে গুমের শিকার সব নাগরিককে উদ্ধার এবং বিচারবহির্ভূত হত্যা ও রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের প্রতিটি ঘটনার দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করে যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর, উপাসনালয় ভাঙচুর এবং সম্পত্তি দখলের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা করতে হবে।

১০. আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন ও বিচার বিভাগকে সরকারি হস্তক্ষেপ পরিহার করে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে।

সর্বশেষ সংবাদ

কলকাতায় বাংলাদেশি পর্যটকে ভাটা, ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত

বোয়ালখালী পৌসভা নানা অনিয়মে গিলে খেয়েছে ‘সিন্ডিকেট’

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে এখনো দাপুটে আওয়ামী লীগের শাহ আমানত ও জান্নাত ট্রেডিং

আ.লীগের ইন্ধনে শহীদ তানভীরের ভাইকে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ

আইটিডি ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্সে চবির সাংবাদিকতা বিভাগের ১৭ গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন

চবিতে ‘ক্যারিয়ার ইনসাইটস ও লাইফ লেসন’ কর্মশালা অনুষ্ঠিত

চবির টাঙ্গাইল স্টুডেন্টস এসোসিয়েশনের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত

পাহাড়ে সেনাশাসন নয়, অপতৎপরতা প্রতিহত করতেই সেনাবাহিনী

চবির হিসাববিজ্ঞান বিভাগের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক হিসাববিজ্ঞান দিবস উদযাপন

যুবদল নেতা শহিদুল ইসলাম শহিদের নেতৃত্বে শোভাযাত্রা