সকাল ১০:১০, শুক্রবার, ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গরমে রোজা, শরীর ঠান্ডা রাখবে যেসব পানীয়

আজকের সারাদেশ প্রতিবেদন:
চলছে পবিত্র রমজান মাস। সূর্যের প্রখর তাপের কারণে প্রকৃতিতে শুরু হয়েছে তীব্র তাপদাহ। ছাতি ফাটা রোদে প্রাণ ওষ্ঠাগত প্রায়। গরমে রোজা তাই শরীর ভেতর থেকে ঠান্ডা রাখা খুব জরুরি। এই সময়ের তাপপ্রবাহ শরীরের ভীষণ ক্ষতি করে। ঘামের সঙ্গে শরীরের প্রয়োজনীয় লবণও বের হয়ে যায় তাই শরীর অনেক দুর্বল হয়ে পড়া স্বাভাবিক। প্রচণ্ড গরমে রোজা রাখতে যেন কষ্ট না হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে।
গরমের তীব্র দাবদাহ থেকে বাঁচতে ইফতার, সেহরিতে ঠান্ডা পানীয় খাওয়ার ঝোঁক থাকে অনেকেরই। স্বাস্থ্য সচেতন অনেকেই আবার এই ধরনের কার্বনেটেড বা নরম পানীয় খেতে চান না স্বাস্থ্যের কথা ভেবে। বিশেষ করে রাস্তাঘাট, ফাস্টফুড কিংবা স্ন্যাকসের দোকানে ঠান্ডা পানীয় ও শরবতের নামে আমরা যা গলাধঃকরণ করছি সেসবের বেশিরভাগই প্রিজারভেটিভ এবং কার্বন ডাইঅক্সাইডযুক্ত হওয়ায় শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এই গরমে শরীর ও মন সতেজ রাখতে এবং সুস্থতার জন্য তাই দরকার প্রাকৃতিক কিছুর ওপর নির্ভরতা। গরম কালে ছাতুর শরবত বা ডাবের পানি তো খেয়েই থাকেন। পুষ্টিবিদদের মতে, এইগুলি ছাড়াও আরও কিছু পানীয় আছে গরম কালে যা শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। মাথার ঘাম পায়ে পড়লেও শরীরে পানির ঘাটতি যেন না হয়। জেনে নিন প্রচন্ড গরমে শরীর ঠান্ডা রাখে যেসব প্রাকৃতিক পানীয়
লেবুর শরবত
ইফতারে শরীরে পানির চাহিদা পূরণে পান করতে লেবুর শরবতের জুড়ি নেই। লেবুর শরবত হলো গরমের সময়ে অন্যতম পরিচিত প্রাকৃতিক পানীয়। ১০০ গ্রাম লেমনেডে ২৯ ক্যালোরি, ১.১ গ্রাম প্রোটিন, ২.৫ গ্রাম চিনি, ২.৮ গ্রাম ফাইবার এবং ৯.৩ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট রয়েছে। প্রচণ্ড গরমে লেবুর শরবত পান করলে শরীর সতেজ এবং আরো বেশি কর্মদ্যোমী হয়ে উঠে। এক গ্লাস লেবুর শরবত গরমে শরীরের পানি স্বল্পতা দূর করে আমাদের এনে দেবে প্রশান্তি। এতে দেহের জন্য ক্ষতিকর কোনো উপাদান নেই। মানুষকে সুস্থ রাখাসহ বিভিন্ন রোগ থেকে প্রতিরোধে লেবুর শরবতের রয়েছে অসাধারণ ক্ষমতা।
বেলের শরবত
অতিরিক্ত ঘামের সঙ্গে বেরিয়ে যাওয়া লবণ শরীরকে আরও ক্লান্ত করে দেয়। এই সময় কিন্তু বেলের শরবত কাজে আসতে পারে। কারণ, বেলের মধ্যে রয়েছে রাইবোফ্ল্যাবিন এবং ভিটামিন বি, যা ঘামলেও শরীরে শক্তির অভাব হতে দেয় না। এ ছাড়াও এর মধ্যে রয়েছে আয়রন, সোডিয়াম, পটাশিয়ামের যৌগ যা হজম শক্তিকে উন্নত করে এবং প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে।
তরমুজের শরবত
ইফতারে শরীরে পানির চাহিদা পূরণে পান করতে পারেন তরমুজের জুস। গরমের সময় তরমুজের শরবত খুবই উপকারি ৷ যারা রোজা রাখছেন তাদের কাছে তরমুজের জুস বিশেষ পছন্দের ৷ কারণ তরমুজের শতকরা ৯২ ভাগই পানি। তাই তরমুজ খেলে সহজেই তৃষ্ণা মেটে। তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, বিটা ক্যারোটিন। এতে চোখ ভালো থাকে ৷ দেহে পানির ঘাটতি দূর হয়৷
ঘোল
দইয়ের সঙ্গে বিভিন্ন রকম মশলা এবং লবণে মিশ্রণে তৈরি এই উপাদেয় পানীয়টি গরমের দিনে শরীর ঠান্ডা করার জন্য আদর্শ। অতিরিক্ত ঘামে যদি ক্লান্ত বোধ করেন। রাস্তার পাশে ছায়া দেখে কোথাও বসে খেয়ে নিতে পারেন এই ঘোল বা বাটারমিল্ক। ক্লান্তি দূর করা তো বটেই পাশাপাশি অন্ত্রের স্বাস্থ্য রক্ষা, হজমেও সহায়তা করে এই পানীয়টি।
শসা-পুদিনার শরবত
শসা এমনিতেই ঠান্ডা। তার সঙ্গে যদি পুদিনা পাতা মেশানো যায় তা হলে গরমের দিনে শরীর এবং মন দুই-ই ঠান্ডা হবে। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে ভরপুর এই পানীয়টি হজম সংক্রান্ত কোনও সমস্যা দূর করতে এবং ওজন ঝরাতেও সাহায্য করে।
আখের রস
আখের রস হল কাঁচা আখ থেকে চেপে প্রাপ্ত নির্যাস। আখের রসের সঙ্গে বিট লবণ, পুদিনাপাতা এবং লেবুর রস মিশিয়ে খেলে সঠিক স্বাদ পাওয়া যায়। এক কাপ আখের রসে ১৮০ ক্যালোরি, ৩০ গ্রাম চিনি থাকে। এতে ডায়েটারি ফাইবার বেশি থাকে।
ডাবের পানি
গরমের সময়ে ডাবের পানি হতে পারে আপনার জন্য উপযুক্ত পানীয়। এক কাপ ডাবের পানিতে থাকে ৬০ ক্যালোরি, ১৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ৮ গ্রাম চিনি এবং পর্যাপ্ত পটাসিয়াম। ডাবের পানিতে ৯৪% পানি থাকে।
পুদিনার শরবত
শরীর ভেতর থেকে ঠান্ডা রাখতে এবং সতেজ অনুভূতির জন্য খাওয়া হয় পুদিনা। গোলগাপ্পা হোক বা চটপটি, সন্ধ্যার নাস্তা ইত্যাদিতে পুদিনা প্রায় প্রতিটি খাবারের একটি সাধারণ সংযোজন। পুদিনা ফসফরাস, ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন সি, ডি, ই এবং এ সমৃদ্ধ। পুদিনার শরবত গরমে আপনাকে ভেতর থেকে শীতল অনুভূতি দেবে।
ঠাণ্ডা কমলা চা
কমলার গন্ধযুক্ত হিম হিম চা শুধু যে শরীর ঠাণ্ডা রাখে তাই নয়, সারাদিন কাজের জন্য শক্তিও যোগায় এই পানীয়। পানি ফুটিয়ে তাতে কমলার খোসা আর চা পাতা দিয়ে চার থেকে পাঁচ মিনিট ফুটিয়ে ছেঁকে ঠাণ্ডা করে ফ্রিজে অন্তত দুই ঘন্টা রাখতে হবে। ফ্রিজ থেকে বের করে তাজা কমলার রস আর চিনি (পছন্দ অনুযায়ী) দিয়ে পরিবেশন করতে হবে বরফ শীতল প্রাণজুড়ানো ঠাণ্ডা কমলা চা।
কোল্ড কফি
গরমের দিনে চা কিংবা কফিপ্রেমিকদের জন্য এক কাপ ঠান্ডা কফি হতে পারে দারুণ উপাদেয় আবার একইসাথে স্বস্তিদায়ক।
ক্যামোমাইল চা
ক্যামোমাইল চা জ্বাল দিয়ে ছেঁকে নিয়ে লিকারটা কিছুক্ষণ ফ্রিজে ঠান্ডা করুন। খাওয়ার আগে মধু মিশিয়ে নিন। যাদের ঘাম বেশি হয় তাদের ডিহাইড্রেশনের হাত থেকে বাঁচাবে এই চা।
আঙুরের রস
আঙুরের রসের সাথে মধু আর বরফ মিশিয়ে খেলেও গরমে আরাম পাবেন। পাবেন শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি। আবার শরীরকে ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা দূর করতেও এই পানীয়ের জুড়ি মেলা ভার।
আম পান্না
কাঁচা আমের ক্বাথ, জিরা এবং পুদিনা পাতা ব্যবহার করে তৈরি করা হয় আম পান্না। এক গ্লাস আম পান্নায় ৯৩ ক্যালোরি রয়েছে, আরও আছে প্রায় ৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট এবং ১.৫ গ্রাম প্রোটিন।
জিরাপানি
নোনতা স্বাদযুক্ত পানীয় জিরাপানি। এটি অনেকেরই প্রিয়। এক গ্লাস জিরাপানিতে থাকে ৬৯ ক্যালরি, ১.৯ গ্রাম প্রোটিন, ৫.৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট এবং ১.৪ গ্রাম ফাইবার। গরমে আপনার জন্য একটি আরামদায়ক প্রাকৃতিক পানীয় হতে পারে জিরাপানি।
মেথি পানি
গরমে মেথি ভেজানো পানি পান করাও খুব উপকারী। কারণ এটি শরীরের অতিরিক্ত প্রদাহ দূর করে প্রশান্তি দেয়। এই মেথি ভেজানো পানি সেহরির সময় উঠে পান করার চেষ্টা করুন। এতে সারাদিন উপকার পাবেন, নিজেকে সতেজ লাগবে।
অ্যালোভেরা
রোদের প্রভাব পড়ে আমাদের ত্বকেও। সান বার্ন বা ত্বকের জ্বালাপোড়া কমাতে কাজ করে অ্যালোভেরা। ত্বকে অ্যালোভেরার শাঁস ব্যবহারের পাশাপাশি পান করতে পারেন অ্যালোভেরার শরবতও। এটি আপনাকে গরমে শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করবে।

সর্বশেষ সংবাদ

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে এখনো দাপুটে আওয়ামী লীগের শাহ আমানত ও জান্নাত ট্রেডিং

আ.লীগের ইন্ধনে শহীদ তানভীরের ভাইকে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ

আইটিডি ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্সে চবির সাংবাদিকতা বিভাগের ১৭ গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন

চবিতে ‘ক্যারিয়ার ইনসাইটস ও লাইফ লেসন’ কর্মশালা অনুষ্ঠিত

চবির টাঙ্গাইল স্টুডেন্টস এসোসিয়েশনের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত

পাহাড়ে সেনাশাসন নয়, অপতৎপরতা প্রতিহত করতেই সেনাবাহিনী

চবির হিসাববিজ্ঞান বিভাগের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক হিসাববিজ্ঞান দিবস উদযাপন

যুবদল নেতা শহিদুল ইসলাম শহিদের নেতৃত্বে শোভাযাত্রা

ঐতিহাসিক ৭ই নভেম্বর ও প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আলেম-ওলামাদের ঢল